আশার ফানুশ উড়িয়ে এশিয়া কাপে বাংলাদেশ

✍️ নিজস্ব প্রতিবেদক ৬/৯/২০২৫, ৫:৪০:৩৮ PM
আশার ফানুশ উড়িয়ে এশিয়া কাপে বাংলাদেশ

এশিয়ান ক্রিকেটের তিন প্রধান দল- ভারত, পাকিস্তান এবং শ্রীলংকা। তারা প্রত্যেকেই এক বা একাধিকবার এশিয়া কাপ চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। এর বাইরে এশিয়ার অন্য কোনো দল শিরোপা জিততে পারেনি। বাংলাদেশ এবং আফগানিস্তান অনেক বছর ধরেই ক্রিকেট খেলছে। এর মধ্যে বাংলাদেশ এশিয়া কাপের ফাইনালে উঠেও শিরোপা পায়নি কখনো।


এশিয়া কাপ ক্রিকেট ২০২৫-এর আসর শুরু হতে চলেছে ৯ সেপ্টেম্বর থেকে সংযুক্ত আরব আমিরাতে, যা টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে অনুষ্ঠিত হবে। এই টুর্নামেন্টে বাংলাদেশ দল গ্রুপ ‘বি’-তে, যেখানে তাদের প্রতিপক্ষ আফগানিস্তান, শ্রীলঙ্কা এবং হংকং। এবার লিটন দাসের নেতৃত্বে মাঠে নামবে বাংলাদেশ। সাম্প্রতিক সিরিজ জয়ের আত্মবিশ্বাস নিয়ে বাংলাদেশ এই টুর্নামেন্টে যাচ্ছে। তবে পরিসংখ্যান বলছে, বাস্তবে অন্য দলগুলোর চেয়ে অনেক পিছিয়ে বাংলাদেশ।


স্কোয়াড

বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) গত মাসে ১৬ সদস্যের স্কোয়াড ঘোষণা করেছে, যেখানে লিটন দাস অধিনায়ক এবং উইকেটকিপারের দায়িত্ব পালন করবেন। স্কোয়াডটি হলো: লিটন দাস (অধিনায়ক, উইকেটকিপার), তানজিদ হাসান, পারভেজ হোসেন ইমন, সাইফ হাসান, তাওহীদ হৃদয়, জাকের আলী, শামিম হোসেন, নুরুল হাসান, মেহেদী হাসান, রিশাদ হোসেন, নাসুম আহমেদ, মুস্তাফিজুর রহমান, তানজিম হাসান, তাসকিন আহমেদ, শরিফুল ইসলাম এবং মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন।


স্কোয়াডে অভিজ্ঞ এবং তরুণের মিশ্রণ রয়েছে। নাজমুল হোসেন শান্তর অনুপস্থিতি লক্ষণীয়, যা দলের মিডল অর্ডারে প্রভাব ফেলতে পারে। উইকেটকিপার-ব্যাটার নুরুল হাসান সোহানের প্রত্যাবর্তন দলকে শক্তি যোগ করেছে, যিনি সাম্প্রতিক ঘরোয়া লিগে ভালো পারফর্ম করেছেন।


মূল শক্তি

বাংলাদেশের প্রধান শক্তি তাদের পেস বোলিং ইউনিটে। তাসকিন আহমেদ, মুস্তাফিজুর রহমান এবং শরিফুল ইসলামের মতো বোলাররা সংযুক্ত আরব আমিরাতের ধীরগতির উইকেটে কার্যকরী হতে পারেন, যেখানে স্পিন এবং স্লোয়ার বলের গুরুত্ব বেশি। সাম্প্রতিক সিরিজে পাকিস্তান এবং শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে জয় বাংলাদেশের আত্মবিশ্বাস বাড়িয়েছে। অধিনায়ক লিটন দাস মনে করেন, দলটি এশিয়া কাপের জন্য ‘ভালোভাবে প্রস্তুত’। তরুণ ব্যাটার তাওহীদ হৃদয় এবং রিশাদ হোসেনের মতো খেলোয়াড়রা দলের সুযোগ বাড়াতে পারে, বিশেষ করে স্পিন-বান্ধব উইকেটে। গ্রুপে হংকংয়ের বিপক্ষে জয়ের সম্ভাবনা উজ্জ্বল, যা সুপার ফোরে উঠার পথ সুগম করতে পারে।


দুর্বলতা

কোনো বিশ্বমানের টি-টোয়েন্টি ব্যাটার নেই বাংলাদেশে। রানের জন্য হয়তো লিটন দাসের ওপরই নির্ভর করতে হবে। আর বড় ম্যাচে চাপ সামলাতে না পারার ঐতিহ্য তো আছেই। সাকিবের অনুপস্থিতিতে স্পিন বিভাগে রিশাদ এবং নাসুমের উপর চাপ বাড়বে। অন্যদিকে ব্যাটাররা আফগানিস্তানের রশিদ খান বা মুজিব উর রহমানের মতো স্পিনারদের মোকাবিলা করতে পারবে কি না, তা প্রশ্ন। শ্রীলঙ্কার ধারাবাহিক উন্নতি এবং আফগানিস্তানের স্পিন আক্রমণ গ্রুপ পর্বে বাংলাদেশের জন্য বড় হুমকি। এছাড়া, মিডল অর্ডারের অস্থিরতা এবং বড় স্কোর গড়তে অক্ষমতা পুরনো সমস্যা তো আছেই।


গ্রুপ পর্বে সম্ভাবনা

গ্রুপ পর্বে বাংলাদেশ সবকটি ম্যাচে হারলেও অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। হংকংয়ের কাছে বিশ্বকাপে হারের রেকর্ড আছে বাংলাদেশের। অন্য দলগুলো বহুবার হারিয়েছে বাংলাদেশকে।


গ্রুপ ‘বি’-তে বাংলাদেশের প্রথম ম্যাচ হংকংয়ের বিপক্ষে ১১ সেপ্টেম্বর, তারপর শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ১৩ সেপ্টেম্বর এবং আফগানিস্তানের বিপক্ষে ১৫ সেপ্টেম্বর। গ্রুপ থেকে পরের পর্বে উঠতে বাংলাদেশকে অন্তত দুটি ম্যাচ জিততে হবে, যা শ্রীলঙ্কা এবং আফগানিস্তানের বিপক্ষে কঠিন হবে।


তবে শ্রীলংকা বা আফগানিস্তানকে হারিয়ে বাংলাদেশ যদি গ্রুপ ফোরে ওঠে, তাহলে ফাইনালও খেলতে পারে। বর্তমান বিচারে ভারতই এ টুর্নামেন্টের সবচেয়ে শক্তিশালী দল।

🔗 শেয়ার করুন:

FacebookWhatsApp
🏷️ ট্যাগ: এশিয়া কাপ, বাংলাদেশ,